বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটেদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায় একটি বিষয় হল কমন স্পেসের খরচ নিয়ে ঝামেলা। লিফট, জেনারেটর, গার্ডেন, আলো – এই সব কিছুর রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কীভাবে ভাগ করা হবে, তা নিয়ে মতের অমিল হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। অনেক সময় দেখা যায়, হিসেবপত্র স্পষ্ট না থাকার কারণে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে। আবার, নতুন নিয়মকানুন চালু হলে পুরনো ভাড়াটেরা সহজে মানতে চান না। এই ধরনের সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার, যাতে সবাই মিলেমিশে থাকতে পারে। আসুন, এই বিষয়ে খুঁটিনাটি কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।নিশ্চিতভাবে এই বিষয়ে আরও তথ্য জেনে নেওয়া যাক!
বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে সম্পর্ক: অধিকার এবং দায়িত্ববাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখাটা খুব জরুরি। একটা সুস্থ সম্পর্ক বজায় থাকলে অনেক সমস্যা এমনিতেই এড়ানো যায়। এক্ষেত্রে দুজনেরই কিছু অধিকার আছে, আবার কিছু দায়িত্বও পালন করতে হয়। দেখা যায়, এই অধিকার আর দায়িত্বগুলো নিয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকার কারণে অনেক সময় ঝামেলা বাঁধে।
বাড়িওয়ালার অধিকার
* ভাড়াটের কাছ থেকে সময় মতো ভাড়া পাওয়ার অধিকার বাড়িওয়ালার আছে। সাধারণত, একটা নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে ভাড়া পরিশোধ করার নিয়ম থাকে। যদি ভাড়াটে নিয়মিতভাবে ভাড়া দিতে দেরি করেন, তাহলে বাড়িওয়ালা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।
* বাড়িওয়ালা তাঁর সম্পত্তির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করার অধিকার রাখেন। তবে, ভাড়াটের ব্যক্তিগত পরিসরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করাটা আইনত অপরাধ। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আগে থেকে নোটিশ দিয়ে জানানো ভালো।
* চুক্তি অনুযায়ী, বাড়িওয়ালা ভাড়াটের কাছে কিছু নিয়মকানুন আশা করতে পারেন। যেমন, বাড়ির মধ্যে কোনো অবৈধ কাজ করা যাবে না বা এমন কিছু করা যাবে না যাতে প্রতিবেশীদের অসুবিধা হয়।
ভাড়াটের অধিকার
* ভাড়াটেরা শান্তিতে এবং নিরাপদে বসবাস করার অধিকার রাখেন। বাড়িওয়ালা কোনো কারণ ছাড়াই তাঁদের বিরক্ত করতে পারেন না। এছাড়াও, বাড়িতে যদি কোনো জরুরি মেরামতের প্রয়োজন হয়, যেমন জলের সমস্যা বা বিদ্যুতের সমস্যা, তাহলে বাড়িওয়ালা দ্রুত সেটা সমাধান করতে বাধ্য।
* ভাড়াটেরা তাঁদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রাখার অধিকার রাখেন। বাড়িওয়ালা বিনা অনুমতিতে তাঁদের ঘরে প্রবেশ করতে পারেন না। যদি কোনো কারণে প্রবেশ করার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগে থেকে ভাড়াটেকে জানাতে হবে।
* ভাড়াটেরা তাঁদের অধিকার রক্ষার জন্য আইনি সাহায্য নিতে পারেন। যদি বাড়িওয়ালা কোনো অন্যায় করেন বা চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেন, তাহলে ভাড়াটেরা আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন।কমন স্পেসের সংজ্ঞা এবং এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহকমন স্পেস বলতে বোঝায় একটি বিল্ডিং বা আবাসন প্রকল্পের সেই অংশগুলো, যা প্রত্যেক বাসিন্দা ব্যবহার করতে পারেন। এই স্থানগুলো কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা পরিবারের জন্য বরাদ্দ থাকে না, বরং এটি সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত।
কমন স্পেসের মধ্যে কী কী থাকে?
* লিফট: বহুতল ভবনে লিফট একটি অপরিহার্য অংশ। এটি সকল ভাড়াটে এবং মালিকদের ব্যবহারের জন্য উপলব্ধ থাকে।
* সিঁড়ি: লিফটের পাশাপাশি সিঁড়িও একটি গুরুত্বপূর্ণ কমন স্পেস। এটি জরুরি অবস্থায় ব্যবহারের জন্য এবং শারীরিক exercise-এর জন্য অনেকে ব্যবহার করেন।
* ছাদ: অনেক বাড়িতে ছাদ একটি কমন স্পেস হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে সকলে জামাকাপড় শুকানো বা অবসর সময় কাটানোর জন্য যেতে পারেন।
* গার্ডেন বা বাগান: কিছু আবাসন প্রকল্পে সুন্দর বাগান থাকে, যেখানে সকলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে পারেন।
* পার্কিং এরিয়া: আবাসিক ভবনে গাড়ি বা মোটরসাইকেল পার্ক করার জন্য যে স্থান থাকে, সেটিও একটি কমন স্পেস।
* কমিউনিটি হল: বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বা মিটিং করার জন্য কমিউনিটি হল ব্যবহার করা হয়, যা সকলের জন্য উন্মুক্ত।
* খেলার মাঠ: বাচ্চাদের খেলার জন্য বা খেলাধুলার জন্য যে মাঠ থাকে, সেটিও কমন স্পেসের অংশ।
* ওয়েটিং লাউঞ্জ: ভিজিটর বা অতিথিদের জন্য ভবনের নিচে যে বসার স্থান থাকে, সেটিও একটি কমন স্পেস।
কমন স্পেস কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কমন স্পেসগুলো একটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি বাসিন্দাদের একে অপরের সাথে মিলিত হওয়ার, কথা বলার এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। এছাড়া, এই স্থানগুলো বাচ্চাদের খেলাধুলা করার এবং শারীরিক activities-এ অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি।কমন স্পেস রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মাবলীকমন স্পেসের রক্ষণাবেক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আবাসিক এলাকার পরিবেশ সুন্দর ও বসবাসযোগ্য রাখতে সাহায্য করে। এই রক্ষণাবেক্ষণের মধ্যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের মেরামতের কাজ অন্তর্ভুক্ত।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা
* নিয়মিত ঝাড়ু দেওয়া ও মোপিং: কমন স্পেস, যেমন সিঁড়ি, লিফট এবং হলওয়ে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। প্রতিদিন ঝাড়ু দেওয়া এবং সপ্তাহে অন্তত দুবার মোপিং করা দরকার।
* আবর্জনা পরিষ্কার: আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করতে হবে এবং নিয়মিত সেই স্থান পরিষ্কার করতে হবে। কোনোভাবেই যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা উচিত নয়।
* বাথরুম ও টয়লেট পরিষ্কার: কমন স্পেসে যদি কোনো বাথরুম বা টয়লেট থাকে, তবে সেটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে এবং জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ
* লিফট রক্ষণাবেক্ষণ: লিফট একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই এটি নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত। কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত তা মেরামত করতে হবে।
* আলোর ব্যবস্থা: কমন স্পেসে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। নষ্ট হয়ে যাওয়া লাইট বাল্ব দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে।
* গার্ডেনিং: বাগানের গাছপালা নিয়মিত ছাঁটতে হবে এবং বাগানের সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হবে।
* দেওয়াল ও রং: দেওয়ালের রং যদি মলিন হয়ে যায় বা কোথাও creak দেখা যায়, তাহলে দ্রুত মেরামত করে রং করতে হবে।
কমন স্পেস | রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মাবলী | গুরুত্ব |
---|---|---|
সিঁড়ি | নিয়মিত ঝাড়ু ও মোপিং | পরিষ্কার ও নিরাপদ রাখা |
লিফট | নিয়মিত পরীক্ষা ও মেরামত | নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করা |
গার্ডেন | গাছপালা ছাঁটা ও পরিচর্যা | সবুজ ও সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা |
আলো | নষ্ট বাল্ব পরিবর্তন | পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করা |
দেওয়াল | মেরামত ও রং করা | পরিষ্কার ও আকর্ষণীয় রাখা |
কমন স্পেসের খরচ: কিভাবে ভাগ করা উচিত? কমন স্পেসের খরচ ভাগ করার নিয়মকানুন সাধারণত অ্যাপার্টমেন্ট মালিক সমিতি বা হাউজিং সোসাইটি নির্ধারণ করে। এই খরচ সাধারণত দুইভাবে ভাগ করা যায়:
সমান ভাগে ভাগ
* এই পদ্ধতিতে, প্রতিটি ফ্ল্যাট বা ইউনিটের মালিককে সমান পরিমাণ খরচ বহন করতে হয়, ফ্ল্যাটের আকার বা আয়তন যাই হোক না কেন।
* ছোট ফ্ল্যাট এবং বড় ফ্ল্যাটের মালিকদের জন্য এটি একটি বিতর্কিত বিষয় হতে পারে, কারণ ছোট ফ্ল্যাটের মালিকরা মনে করতে পারেন যে তারা বড় ফ্ল্যাটের মালিকদের তুলনায় বেশি খরচ দিচ্ছেন।
আয়তনের ভিত্তিতে ভাগ
* এই পদ্ধতিতে, ফ্ল্যাটের আয়তনের উপর ভিত্তি করে খরচ ভাগ করা হয়। অর্থাৎ, যে ফ্ল্যাট যত বড়, সেই ফ্ল্যাটের মালিককে তত বেশি খরচ দিতে হয়।
* এটি একটি ন্যায্য পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ বড় ফ্ল্যাটের মালিকরা কমন স্পেসের সুবিধা বেশি ভোগ করেন।
অন্যান্য বিষয়
* কিছু ক্ষেত্রে, পার্কিং স্পেসের সংখ্যা বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার উপর ভিত্তি করে খরচ ভাগ করা হয়।
* কমিউনিটি হল বা সুইমিং পুলের মতো বিশেষ সুবিধার জন্য আলাদা চার্জ ধার্য করা হতে পারে।কমন স্পেসের খরচ নিয়ে বিরোধ: কারণ ও সমাধানকমন স্পেসের খরচ নিয়ে প্রায়ই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটেদের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়। এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
খরচের স্বচ্ছতা অভাব
* অনেক সময় দেখা যায়, কমন স্পেসের রক্ষণাবেক্ষণের খরচ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া হয় না। ফলে, বাসিন্দাদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং তারা মনে করেন যে অতিরিক্ত খরচ নেওয়া হচ্ছে।
* মাসিক বিল বা রক্ষণাবেক্ষণ চার্জের বিস্তারিত হিসাব না পেলে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
অতিরিক্ত খরচ
* কখনো কখনো সোসাইটি বা অ্যাপার্টমেন্ট মালিক সমিতি এমন কিছু খরচের দাবি করে, যা বাসিন্দাদের কাছে অযৌক্তিক মনে হয়। যেমন, অপ্রয়োজনীয় সংস্কার বা অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের খরচ।
* এই ধরনের পরিস্থিতিতে বাসিন্দারা প্রতিবাদ করতে পারেন এবং খরচের যৌক্তিকতা প্রমাণের দাবি জানাতে পারেন।
নিয়মাবলীর অভাব
* কমন স্পেস ব্যবহারের নিয়মাবলী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝি হয়। কোন স্পেস কে ব্যবহার করতে পারবে, কখন ব্যবহার করতে পারবে, সে বিষয়ে লিখিত নিয়ম থাকা জরুরি।
* নিয়ম না থাকার কারণে অনেকে নিজের ইচ্ছেমতো স্পেস ব্যবহার করেন, যা অন্যদের জন্য অসুবিধার কারণ হতে পারে।
সমাধানের উপায়
* নিয়মিত মিটিং: সোসাইটি বা অ্যাপার্টমেন্ট মালিক সমিতির উচিত নিয়মিত মিটিং করা এবং সেখানে খরচের হিসাব খোলাখুলি আলোচনা করা।
* স্বচ্ছতা: খরচের প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে বাসিন্দাদের বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। প্রয়োজনে হিসাব নিরীক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
* যৌক্তিক খরচ: অযৌক্তিক বা অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত। বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে খরচ নির্ধারণ করা উচিত।
* লিখিত নিয়মাবলী: কমন স্পেস ব্যবহারের নিয়মাবলী লিখিত আকারে তৈরি করতে হবে এবং তা সকল বাসিন্দাদের জানাতে হবে।আইনি পদক্ষেপ ও পরামর্শকমন স্পেসের খরচ নিয়ে বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে, কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো।
আইনি পরামর্শ
* প্রথমত, একজন আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি আপনার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক আইনি পথ দেখাতে পারবেন।
* আইনজীবী আপনাকে আপনার অধিকার এবং দায়িত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন, যা বিরোধ সমাধানে সাহায্য করবে।
মামলা দায়ের
* যদি আলোচনার মাধ্যমে কোনো সমাধান না হয়, তাহলে দেওয়ানি আদালতে (Civil Court) মামলা দায়ের করা যেতে পারে।
* মামলা করার আগে, আপনার কাছে সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং প্রমাণ থাকতে হবে। যেমন, ফ্ল্যাট কেনার চুক্তিপত্র, রক্ষণাবেক্ষণ বিল, সোসাইটির নিয়মাবলী ইত্যাদি।
ভোক্তা সুরক্ষা আইন
* কখনো কখনো, কমন স্পেসের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রতারণা বা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে ভোক্তা সুরক্ষা আইনেও অভিযোগ করা যেতে পারে।
* যদি মনে হয়, আপনাকে ভুল বুঝিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রি করা হয়েছে বা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে দেওয়া হয়নি, তাহলে আপনি এই আইনের সাহায্য নিতে পারেন।কমন স্পেসের সঠিক ব্যবহার ও যত্নের গুরুত্বকমন স্পেস শুধু ব্যবহারের জন্য নয়, এর সঠিক ব্যবহার এবং যত্ন নেওয়াও জরুরি। এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা
* কমন স্পেস ব্যবহার করার পর তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। কোনো জিনিস ফেললে বা ময়লা করলে তা সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করা উচিত।
* নিজেরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি অন্যদেরও এই বিষয়ে উৎসাহিত করা উচিত।
ক্ষতি এড়ানো
* কমন স্পেসের কোনো জিনিস নষ্ট করা উচিত নয়। যদি কোনো কারণে কোনো জিনিস ভেঙে যায় বা ক্ষতি হয়, তাহলে তা দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
* লিফটের বোতাম বা বাগানের গাছপালা নষ্ট করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
সচেতনতা তৈরি
* কমন স্পেসের গুরুত্ব এবং এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে অন্যদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা উচিত।
* পোস্টার, লিফলেট বা আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ে সবাইকে জানানো যেতে পারে।বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে একটি সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখা উভয়পক্ষের জন্য জরুরি। অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকলে অনেক সমস্যা এড়ানো সম্ভব। সকলে মিলেমিশে থাকলে জীবন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে।
শেষ কথা
আশা করি, এই আলোচনা থেকে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া উভয়েই উপকৃত হবেন। একটি শান্তিপূর্ণ এবং সহযোগী পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে সকলে সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারবেন। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এবং দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব।
মনে রাখবেন, যেকোনো সমস্যা সমাধানে আলোচনার বিকল্প নেই। তাই, কোনো বিষয়ে মতভেদ হলে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করাই বুদ্ধিমানের কাজ। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
1. বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র করার আগে ভালোভাবে সব শর্ত জেনে নিন।
2. বাড়িওয়ালার সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন, প্রয়োজনে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন।
3. আপনার অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং প্রয়োজনে আইনি সাহায্য নিন।
4. কমন স্পেসের নিয়মকানুন মেনে চলুন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
5. নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করুন এবং বাড়িওয়ালার সাথে যোগাযোগ রাখুন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ
বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়ার অধিকার এবং দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা জরুরি। কমন স্পেসের ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী মেনে চলা উচিত। কোনো সমস্যা হলে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা উচিত। প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ নিতে দ্বিধা করবেন না।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖
প্র: কমন স্পেসের খরচগুলো কী কী হতে পারে?
উ: দেখুন ভাই, কমন স্পেস মানেই তো অনেক কিছু! লিফটের ইলেকট্রিক বিল, জেনারেটরের তেল খরচ, গার্ডেনিংয়ের খরচ, সিকিউরিটি গার্ডের মাইনে, আর বিল্ডিংয়ের আলো জ্বালানোর খরচ – এইগুলো তো আছেই। এছাড়াও, জলের পাম্প, সুইমিং পুল (যদি থাকে), আর অন্য কোনও আধুনিক সুবিধা থাকলে সেগুলোর খরচও যোগ হবে। তাই আগে থেকে একটা লিস্ট করে নিলে হিসেব বুঝতে সুবিধা হয়।
প্র: এই খরচগুলো কীভাবে ভাগ করা উচিত? সবার জন্য কি একই নিয়ম?
উ: না, সবসময় এক নিয়ম চলে না। সাধারণত, ফ্ল্যাটের আয়তনের ওপর নির্ভর করে খরচ ভাগ করা হয়। যার ফ্ল্যাট যত বড়, তার ভাগের পরিমাণ তত বেশি। আবার, অনেকে ফ্ল্যাটের সংখ্যা অনুযায়ী সমান ভাগ করে দেন। তবে লিফট বা জেনারেটর ব্যবহারের ক্ষেত্রে, গ্রাউন্ড ফ্লোরের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা নিয়ম হতে পারে, কারণ তারা হয়তো এগুলো ব্যবহার করেন না। এই ব্যাপারে বিল্ডিংয়ের মালিক এবং সোসাইটির সদস্যদের মধ্যে আলোচনা করে একটা সাধারণ নিয়ম তৈরি করে নেওয়াই ভালো।
প্র: ভাড়াটেরা যদি এই খরচ দিতে না চান, তাহলে কী করা উচিত?
উ: দেখুন, ভাড়াটেরা যদি যুক্তিসঙ্গত কারণে খরচ দিতে না চান, তাহলে তাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। হয়তো তাদের আর্থিক সমস্যা আছে বা তারা মনে করছেন হিসেবটা ঠিক নেই। সেক্ষেত্রে, তাদের অভিযোগগুলো মন দিয়ে শুনে, রসিদ দেখিয়ে বা অন্যান্য প্রমাণ দিয়ে বুঝিয়ে বলতে হবে। যদি তাতেও কাজ না হয়, তাহলে লিজিং এগ্রিমেন্টে কী লেখা আছে, সেটা দেখতে হবে। সেখানে যদি এই খরচের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ থাকে, তাহলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যদি কোনো সমাধান না পাওয়া যায়, তাহলে আইনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তবে আমার মনে হয়, আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
📚 তথ্যসূত্র
Wikipedia Encyclopedia